স্বামীকে ডিভোর্স দিলেন শাবনূর- বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়কার তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। স্বামী অনিকের প্রায় আট বছরের যৌথ জীবন! ‘বনিবনা হচ্ছে না’-এমন কা”রণ দেখিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি স্বামীকে তালাক দিয়েছেন ঢালিউডের নাম্বার ওয়ান চিত্রনায়িকা।
তবে জানা গেছে আরোও অনেকগুলো কা”রন। শারমীন নাহিদ নূপুর ওরফে শাবনূর স্বাক্ষরিত নোটিশটি তার অ্যা’ডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে স্বামীকে পাঠিয়েছেন। নোটিশে অনিকের সঙ্গে ‘বনিবনা হয় না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শাবনূর-অনিক কাউকে না পাওয়া গেলেও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তালাকের নোটিশ এবং হলফনামা প্রস্তুতকারী অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদ।তিনি বলেন, ‘গত ২৬ জানুয়ারি অনিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করেছেন শাবনূর। গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনিকের উত্তরা এবং গাজীপুরের বাসার ঠিকানায় সেই নোটিশ পাঠানো হয়।
উত্তরার নোটিশটি ফেরত এলেও গাজীপুরের ঠিকানায় পাঠানো নোটিশ এখনো ফেরত আসেনি। নোটিশটি অনিক গ্রহণ না করলে এর মধ্যেই ফেরত আসত। তবে আ’ইনগতভাবে তাঁদের এই তালাক কার্যকর হবে ৯০ দিন পর।’ তালাক নোটিশে শাবনূর বলেছেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয় সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও র’ক্ষণাবেক্ষ’ণ করেন না। সে মা’দ’কাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে ম’দ্য’প অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারী রিক ও মানসিক নি’র্যা’তন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে স’ম্প’র্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে। একজন মু’সলিম স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামী যে ব্যবহার করেন অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নি’র্যা’তন করে। এসব কা”রণে আমার জীবনে অ’শান্তি নেমে এসেছে। চে’ষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নি’র্যা’তন আরো বাড়তে থাকে। উপরোক্ত কা”রণগুলোর জন্য মনে হয় তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারব না। তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব স’ম্প’র্ক ছেদ করতে চাই। মু’সলিম আ’ই’ন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।
’ ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে আংটি বদল করেন শাবনূর। এরপর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আইজান নিহান নামে এক পুত্র সন্তানের মা হন শাবনূর। পুত্রকে নিয়ে তিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। সাত বছর আগে অনিক মাহমুদ হৃদয়ের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়কার তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। বিয়ের পরের বছরই এ দম্পতির ঘর আলোকিত করে আসে এক পুত্রসন্তান। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভেঙে গেল সেই সংসার! শাবনূর বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। স্বামীকে তালাকের নোটিশ দেওয়ার বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার তার অস্ট্রেলিয়ার ফোন নম্বরে কল করা হলে সেটি ব’ন্ধ পাওয়া যায়। পরে সেখানে থাকা তাঁর ছোট বোন ঝুমুরের হোয়াটসঅ্যাপে শাবনূরের বক্তব্য জানতে চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়। তিনি বার্তাটি দেখলেও কোনো উত্তর দেননি। বিষয়টি জানতে অনিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে শুরুতে তিনি কল ধরেন। কিন্তু পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি বলেন, ‘আমি এখন ওয়াশরুমে। পরে কথা বলব।’ পরে অনেকবার সেই নম্বরে কল করা হলেও তিনি আর ফোন ধরেননি। উল্লেখ্য, বছর তিনেক আগেও মিডিয়ায় শাবনূর-অনিকের ছাড়াছাড়ির গু’ঞ্জ’ন ওঠে। সে সময় অনিক মিডিয়াকে বলেছিলেন এমন কিছু হয়নি। তারা একসঙ্গেই আছেন, ভালো আছেন। কিন্তু অনিকের নতুন পাসপোর্টে এখন স্ত্রীর নামের জায়গায় আয়েশা আক্তারের নাম দেওয়া আছে। জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃ ত্যুর পেছনে চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অ’ন্তর’ঙ্গতা’কেও দায়ী করে সম্প্রতি আ’দা’লতে প্রতিবেদন দিয়েছে পিবিআই। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, সালমান শাহ্ খু ন হননি, তিনি আ’ত্মহ ত্যা করেছেন। তার আ’ত্মহ ত্যার পেছনে রয়েছে পাঁচ কা”রণ। কা”রণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অ’ন্তর’ঙ্গতা’। তবে এ অ’ভিযো’গ অ’স্বীকার করে শাবনূর দাবি করেন, তাকে ফাঁ সাতে ষ’ড়য’ন্ত্র হচ্ছে। একসময় সালমান শাহ-শাবনূর জু’টি মানেই ছিল সুপারহিট সিনেমা। সালমান শাহের অ’কাল প্র’য়াণের পর রিয়াজের সঙ্গে শাবনূরের জু’টিও ছিল দারুণ জনপ্রিয় ও সফল। এছাড়া মান্না, ফেরদৌস, শাকিব খানের সঙ্গেও তার সফল সিনেমা রয়েছে। বেশ লম্বা বিরতির পর সম্প্রতি তার সিনেমায় ফেরার খবর শোনা যাচ্ছে। ১৯৭৯ সালের যশোর জেলার শার্শা উপজে’লার নাভারণে শাবনূরের জন্ম। তার পারিবারিক নাম কাজী শারমিন নাহিদ নুপুর। পরে স্বনামধন্য নির্মাতা এবং তার মেনটর এহতেশাম তার নাম রাখেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ রাতের আলো। আর সত্যিই তিনি সিনেমাজগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েই আলো ছড়িয়েছেন। সাব্বিরের বি’প’রীতে শাবনূরের প্রথম সিনেমা এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ (১৯৯৩) ব্যবসায়িকভাবে ব্য’র্থ হলেও পরে সালমান শাহের সঙ্গে প্রায় প্রতিটি সিনেমাই দারুণ সফল হয়। জনপ্রিয় সালমান শাহ-শাবনূর জুটির ১৪টি সিনেমাই হিট কিংবা সুপারহিট হয়।
এই জুটির প্রথম ছায়াছবি জহিরুল হক পরিচালিত ‘তুমি আমার’ ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায়। এ কই বছর শাহ আলম কিরণ তাদের নিয়ে ফারুক-কবরী জু’টির ‘সুজন সখী’ চলচ্চিত্রের রঙিন পুনঃনির্মাণ করেন। ১৯৯৫ সালে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ১৯৯৬ সালে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘তোমাকে চাই’, ১৯৯৭ সালে শিবলি সাদিক পরিচালিত ‘আনন্দ অশ্রু’ এ জুটির উল্লেখযোগ্য ছবি।