গোপালগঞ্জ (কোটালীপাড়া) সংবাদদাতা : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত রামশীল ইউনিয়ন। যার পূর্ব সীমান্ত জুড়ে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা এবং মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার ডাসার থানা রয়েছে। ফলে এই জনপদের মানুষ পাশ্ববর্তী জেলা দুটির উন্নত হাটবাজারগুলোতে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থায় অতিকষ্টে যাতায়াত করতে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রামশীল পুরো ইউনিয়নটিই একটি বিল অধ্যুষিত এলাকা। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছালেও যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ দুর্ভোগের হাত থেকে মুক্তি পায়নি।
পুরো রামশীলের মানচিত্র জুড়েই দেখা গেছে বড় বড় বিল। এই বিলের মধ্যেই রয়েছে আবার ঘন বসতি। যে এলাকায় মানুষ বসতি গড়েছে, সে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে যে, সেসব এলাকায় গড়ে ওঠেনি পর্যাপ্ত যাতায়াত ব্যবস্থা।
রামশীল ইউনিয়ন জুড়ে দুই তিনটি বড় রাস্তা থাকলেও মূলত এই বিল এলাকার সেসব গ্রামে মানুষ বসবাস করে বেশি সেসব গ্রামের ভিতরে ছোট ছোট রাস্তার খুবই অভাব। ফলে এই ইউনিয়নবাসীদের মূল সড়কে আসতে হলে বহু কষ্টে বাড়ি বাড়ি ঘুরে যাতায়াত করতে হয়।
প্রাইভেট কার তো দূরের কথা সামান্য মটরসাইকেল নিয়েও অধিকাংশ গ্রামের বাড়িগুলোতে যাতায়াত করা যায় না।
রামশীল ইউনিয়নের খাগবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করে। আবার অনেক ছেলে মেয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পড়াশোনা ও চাকরি করে। ফলে যারা দূর দূরান্তে চাকরি করে, যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে নিজের গ্রামে বেড়াতেও আসতে সমস্যা হয় তাদের।
পাশাপাশি যারা গ্রামে থাকেন, তারা তো সারা বছরই চরম দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে যাতায়াত করেন।
মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক লিটন জয়ধর বলেন, আমার বাড়ি রামশীলের খাড়বাড়ি গ্রামে। কিন্তু এই গ্রামের বিষ্ণু মন্দির থেকে আমাদের জয়ধর বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার পথ মানুষের বাড়ির উপর দিয়ে হাটতে হাটতে আসতে হয়। একটি পায়ে হাটার মাটির রাস্তা থাকলে আমরা মানুষের বাড়ির উঠান দিয়ে যাতায়াত করতে হত না। অথচ আমাদের হাজার বছরের এই দুর্ভোগ কবে যে শেষ হবে জানি না।’
একই ধরনের কথা বলেন এই গ্রামের অনেক মানুষ। এতো গেল রাস্তা নেই। এই রকম রাস্তা নেই সমস্যা পুরো ইউনিয়ন জুড়েই। আর কিছু কিছু ইটের রাস্তা আছে তাও প্রায় ঝুুঁকিপূর্ণ। খানা খন্দকে ভরপুর।
মটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলাম (সংবাদদাতা) খাগবাড়ি টেকনিক্যাল এন্ড বিজনেজ ম্যানেজমেন্ট কলেজ রোড দিয়ে। রাস্তাটির ইট বিভিন্ন স্থানে সরে গিয়ে, উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই রাস্তা দিয়েও চলাচল করা সম্পূর্ণ অনুযোপযোগী।
এই ইউনিয়নের সন্তান সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রিপনচন্দ্র মল্লিক বলেন, আমাদের খাগবাড়িই শুধু নয়। পুরো ইউনিয়নের খাগবাড়ি, কাফুলাবাড়ি, পহরেরবাড়ি, কবরবাড়ি, জহরেরকান্দি, শৈলদাহ, মশুরিয়া গ্রামগুলোর মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থার একই চিত্র। অধিকাংশ গ্রামেই যাতায়াত ব্যবস্থার কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কয়েকটি মূল রাস্তা থাকলেও যেসব এলাকা জুড়ে মানুষের ঘনবসিত যেসসব এলাকার মানুষের মূল রাস্তায় আসতে কোন রাস্তা নেই। ফলে এই ইউনিয়নের মানুষরা চরম দুর্ভোগেই আছে। অথচ আমাদের এমপি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এব্যাপারে রামশীল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন বালা বলেন, ‘রামশীল ইউনিয়নের যাতায়াত ব্যবস্থা ১০ বছর আগে আরো খারাপ ছিল। আমি কয়েক বছর ধরে রাস্তা ঘাট উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
|