করোনা ভাইরাসে প্রাণ হারালেন ভাইরাসটি নিয়ে অন্যান্যদের প্রথম সতর্ক করা চীনা চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আগ থেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, গত ৩০শে ডিসেম্বর রহস্যজনক এই ভাইরাসটি নিয়ে নিজের সতীর্থদের সতর্ক করেছিলেন তিনি। এর আগেই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছিল উহানে। তবে চীন সরকার তা ধামাচাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করে। ওয়েনলিয়াংই প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এ বিষয়ে একটি অনলাইন চ্যাট গ্রুপে নিজের সহকর্মীদের সতর্ক করেন। ওই চ্যাটগ্রুপ থেকে পরবর্তীতে সে তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন অন্যান্যরা। যার ফলে বিশ্বের কাছে প্রথমবারের মতো উহানের করোনা ভাইরাস নিয়ে তথ্য প্রকাশ পায়। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য প্রকাশের জন্য ওয়েনলিয়াংকে তিরস্কার করেছিল। তাকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেছিল। তার বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে তদন্তও চালু হয়েছিল। ওয়েনলিং তার পোস্টে লিখেছিলেন, নতুন রহস্যজনক ভাইরাসটি দেখতে অনেকটা ২০০২ সালের সারস ভাইরাসের মতো। এতে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সারস এর উৎপত্তিস্থল ছিল চীন। সেটিও সামপ্রতিক ভাইরাসটির মতো একটি করোনা ভাইরাস ছিল । এতে বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ৮০০ মানুষ। এদিকে, প্রাথমিকভাবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাপের শিকার হলেও, পরবর্তীতে ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ওয়েনলিংয়ের প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয়। কিন্তু ততদিনে নিজেই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েন ওয়েনলিং। চীন সরকারের তথ্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার কারণে ভাইরাসটি প্রাথমিকভাবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না বলে ধরা হয়েছিল। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত এক রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে এতে আক্রান্ত হন ওয়েনলিং। প্রাথমিকভাবে, ওয়েনলিংয়ের মৃত্যু নিয়ে সাংঘর্ষিক তথ্য প্রকাশ হয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমে। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২.৫৮ মিনিটে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে চীনে মারা গেছেন ৬৩৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ হাজারের বেশি। প্রতিদিন কয়েক ডজন করে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। আপনার মতামত দিন নাম ইমেইল