কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ২৫ দিন পর মামলা

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ধন্যরাম রায় (১৬) নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ২৫ দিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে একমাত্র সন্তান হারানোর বেদনা আর ঘাতকদের হুমকি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের রোষানলে পড়ে এখন আতঙ্ক আর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বিধবা মহিলা পারনা রানী রায়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই-কমিশনার অজিৎ কুমার মিশ্র বৃহস্পতিবার বিকেলে পারনা রানীর পরিবারকে শান্ত্বনা দিতে তার বাড়িতে আসেন এবং তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কাহারোল উপজেলার নিভৃত পল্লী তারগাঁও ইউনিয়নের বিরোলী গ্রামে মা পারনা রানীর সাথে বাস করতেন ১৪ বছর আগে পিতৃহারা কিশোর ধন্যরাম রায়। মা পারনা রানী রায় মানুষের বাসায় কাজ করে সন্তানের ভরণ-পোষণ ও লেখাপড়া চালাতেন। স্বপ্ন দেখছিলেন সন্তান বড় হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নেবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় গত ২ জুন। সেদিন গরুর জমির বীজতলা খাওয়া নিয়ে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী মৃত ফজলুল হকের ছেলে শাহজাহান আলী, আব্দুল জব্বার, আবুল কালাম ও আবুল বাশারসহ অন্যান্যরা পিটিয়ে ধন্যরাম রায়কে হত্যা করে।
পারনা রানী রায় জানান, ছেলে হত্যার মামলা করার প্রস্তুতি নিলে হত্যাকারীরা তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। পাশাপাশি স্থানীয় ৪নং তারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মামলা না করে আপোষ মীমাংসার প্রস্তাব দেয় বার বার। এক পর্যায়ে বাধা উপেক্ষা করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গত ২৮ জুন পারনা রানী কাহারোল থানায় ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর কাহারোল থানা পুলিশ শাহজাহান আলী নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
পারনা রানীর ভাই শরত চন্দ্র রায় জানান, তারা বার বার মামলা করার প্রস্তুতি নিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম তাদের বাধা দেয় এবং বিষয়টি আপোষ মীমাংসা করে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। আপোষ মীমাংসার প্রস্তাব দেওয়ার কথা অস্বীকার করে ৪নং তারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘দোষী যেই হোক তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ’
এ বিষয়ে কাহারোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আলী বলেন, ২৮ জুন নিহতের মা পারনা রানী রায় বাদী হয়ে কাহারোল থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেন। আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করি। মামলা দায়েরের পরপরই প্রধান আসামি শাহজাহান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি জানান ওসি।
এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনার অজিৎ কুমার মিশ্র বৃহস্পতিবার বিকেলে ছুটে আসেন কাহারোল উপজেলার নিভৃত পল্লী বিরোলী গ্রামে। ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনারকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পারনা রানী। এ সময় তিনি তার সন্তান হত্যার এবং অসহায়ত্বের কথা ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে বর্ণনা করেন। ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার অজিৎ কুমার অজিৎ কুমার মিশ্র পারনা রানী রায়কে শান্তনা দেন। স্থানীয় গ্রামবাসীকে অসহায় ওই মহিলার পাশে এসে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানান তিনি।
Earn Money Online

https://dailynewstimesbd.com/

Post a Comment

আপনার মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আপনাদের সকল মেসেজ গুলি আমি দেখি, ব্যাস্ততার জন্য অনেক সময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না, আশা করি সময় করে সবার উত্তর দিবো,, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য

Previous Post Next Post

Popular Posts