খালি হাতেই জঙ্গিকে জাপটে ধরে রাখেন সুভাষ দাশ ও তার স্ত্রী ছবি রাণী দাশ

সীতাকুন্ড : খালি হাতেই দুই জঙ্গিকে ধরে ফেলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুভাষ দাশ ও তার স্ত্রী ছবি রাণী দাশ। পুলিশ না আসা পর্যন্ত জাপটে ধরে রাখেন দুই জঙ্গিকে।


পুলিশ জানায়, ওই দুই জঙ্গি ছিলেন নব্য জেএমবি’র আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। ঘটনার সময় নারী জঙ্গিটি কয়েকবার তার কোমরে বেঁধে রাখা বোতাম টিপে বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা করে। কিন্তু সুভাষ ও তার স্ত্রীর প্রচেষ্টায় তা আর সম্ভব হয়নি। প্রায় আধা ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। পুলিশের হাতে দুই জঙ্গি ও তাদের ১৫ বছরের ছেলেকে তুলে দেন তারা। তাদের অসীম সাহসিকতার কারণেই গত বুধবার সীতাকুণ্ডে দু’টি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ।  
গতকাল বৃহস্পতিবার সীতাকু্লের নামারবাজার আমিরাবাদ এলাকায় সাধন কুঠির নামের বাড়িতে কথা হয় এই সাহসী দম্পতির সাথে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে সুভাষ বলেন, গত ২ মার্চ জসিম ও আরজিনা নামে এক দম্পতি সাধন কুঠিরের নিচের তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। পরে তাদের সাথে আরো দুইজন ওই বাসায় এসে থাকতে শুরু করে। জসিম ও আরজিনা প্রথমে জানিয়েছিল তারা কক্সবাজার থেকে এসেছে।
কিন্তু তিনদিন পরে স্থানীয় এক   রিকশাওয়ালার কাছ থেকে জানতে পারি জসিম ও আরজিনা সীতাকু্লের প্রেমতলার একটি বাসায় থাকতো। সেখান থেকে ওই রিকশাওয়ালার সাহায্যেই বাসার জিনিসপত্র নতুন বাসায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনাটি শুনে খটকা লাগে। বিষয়টি যাচাই করে দেখতে ওই ভাড়াটিয়ার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চাই। যাচাই করে দেখা যায় যে জাতীয় পরিচয়পত্রটি ভুয়া।
সুভাষ বলেন, পরিচয়পত্রের সমস্যার কথা বলে আমরা তাদেরকে বাসা ছেড়ে দিতে বললে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে তাদেরকে চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়। দুইজন ওই রাতেই বাসা ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু জসিম, আরজিনা ও তাদের ছেলে বাসায় থেকে যায়। বুধবার দুপুরে আমি ও আমার স্ত্রী পুনরায় তাদের সাথে দেখা করে বাসা ছাড়তে বলি। এতে তারা রেগে গিয়ে বাসার দরজা বন্ধ করে দেয়। প্রশাসনের লোক এসেছে বলায় আবার দরজা খোলে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আরজিনা আমার স্ত্রীর হাতে কামড় দেয়। হঠাৎ তার স্বামী একটি ব্যাগ বের করে। আমি ব্যাগের মধ্যে একটি পিস্তল দেখতে পেয়ে দ্রুত সেটি নিয়ে নেই। তখন মহিলাটি তার কোমরে হাত দেয়। আমি চিৎকার করে আমার স্ত্রীকে বলি মহিলাকে যেন জোরে চেপে ধরে রাখে।
কারণ মহিলাটি তার কোমরে বেেঁধ রাখা বোমা বিস্ফোরণের চেষ্টা করছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী ওই দু’জনকে জাপটে ধরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকি। এসময় সাগর (ডিশ ব্যবসায়ী) ও আমার বোন পুলিশকে ফোন করে। প্রায় আধা ঘন্টা পরে পুলিশ আসার পর আমরা বিপদ থেকে রক্ষা পাই।
সুভাষ ও ছবি রাণী দম্পতিকে জঙ্গি ধরার কাজে সহায়তা করেন স্থানীয় ডিশ ব্যবসায়ী সুনন্দ ভট্টাচার্য সাগর। তিনি জানান, জঙ্গি নারীটি যদি কোনোমতে তার কোমরে রাখা বোমা বিস্ফোরণ করতে পারতো তাহলে কয়েকজন মানুষ মারা যেতো। সৃষ্টিকর্তা সহায় ছিলেন বলেই আমরা অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি।
আরও পড়ুনঃ গার্লফ্রেন্ডকে ২ হাজার টাকার নোটে
Earn Money Online

https://dailynewstimesbd.com/

Post a Comment

আপনার মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আপনাদের সকল মেসেজ গুলি আমি দেখি, ব্যাস্ততার জন্য অনেক সময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না, আশা করি সময় করে সবার উত্তর দিবো,, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য

Previous Post Next Post

Popular Posts