আফ্রিদি সত্যিই অবসরে!

বিশ্বাস হচ্ছে না, শহীদ আফ্রিদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন? গত পরশু পিএসএলে পেশোয়ার জালমির হয়ে ম্যাচ খেলার পর সত্যিই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আফ্রিদি, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলাম আমি।’ তবু বিশ্বাস হচ্ছে না? আপনার আর দোষ কী! আজ অবসরের ঘোষণা দেওয়া তো কাল অবসর ভেঙে ফিরে আসা। বিষয়টিকে পাকিস্তানি অলরাউন্ডার এতই খেলো বানিয়ে ফেলেছিলেন যে, বিশ্বাস করা কষ্টকরই।



টুইটারে ঝড় উঠেছে। একজন লিখেছেন, ‘আফ্রিদির অবসরের ঘোষণা কেজরিওয়ালের থাপ্পড় খাওয়ার মতো। দুটিই নিয়মিত ঘটছে আর দুই ক্ষেত্রেই মানুষ হাসে।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘অবসর সাময়িক, ফিরে আসা চিরন্তন।’
আফ্রিদিকে নিয়ে এই মজা মানুষ করতেই পারে। এটি নিয়ে কম বিনোদন তো দেননি! ২০০৬ সালে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে আবার ফিরে আসেন। ২০১০ সালে খেলেন ২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারের সর্বশেষ ম্যাচ। ২০১৫ সালে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন বলে ঘোষণা দেন। বিশ্বকাপ শেষে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও অবসর নেননি। জানান, পরিবার ও বন্ধুরা আরও খেলে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে!
আফ্রিদির বয়সের বিষয়টিও ক্রিকেট মহলে দারুণ এক বিনোদনের বিষয়। কেউ কেউ তাঁকে বলেন ক্রিকেটের ‘পিটার প্যান’। জে এম বেরির দ্য লিটল হোয়াইট বার্ড উপন্যাসের চরিত্র পিটার প্যানের বয়স কখনোই বাড়ে না। ক্রিকেট অনুসারীদের মধ্যেও এমন ধারণা যে আফ্রিদিরও বয়স বাড়ে না! 
আফ্রিদি মানুষকে বিনোদন দিয়েছেন ব্যাট আর বল হাতেও। ব্যাট হাতে ইমরান খান আর বল হাতে আবদুল কাদিরের মতো ধ্রুপদি তিনি ছিলেন না। তবে মারকাটারি ব্যাটিং, কার্যকর লেগ স্পিন আর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে দর্শকদের আনন্দ ঠিকই বিলিয়ে গেছেন আফ্রিদি। তাঁর ব্যাটিং সত্যিকার অর্থেই স্নায়ুক্ষয়ী, রক্তচাপ বাড়িয়ে দেওয়ার মতো! পাকিস্তান দলটির মতোই আফ্রিদির ব্যাটিং চূড়ান্ত অননুমেয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবেই ভবিষ্যতের এক তারকার আগমনবার্তা দেন। ১৯৯৬ সালে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে কেনিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যাট করারই সুযোগ পাননি। নাইরোবিতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ বলে করেন সেঞ্চুরি। ভেঙে দেন সনাৎ জয়াসুরিয়ার দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। বল হাতেও আফ্রিদি একই রকম অননুমেয়—কখনো স্পিনসহায়ক উইকেটে করেছেন বাজে বোলিং, থেকেছেন উইকেটশূন্য। আবার গায়ানার পেসসহায়ক উইকেটে লেগ স্পিন আর গুগলির পসরা সাজিয়ে ১২ রানে ৭ উইকেটও নিয়েছেন।
এবারের ঘোষণাটা চূড়ান্ত ধরলে আফ্রিদির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমে গেল ২৭ টেস্ট, ৩৯৮ ওয়ানডে ও ৯৮ টি-টোয়েন্টিতে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫২৩ ম্যাচ খেলে ১১ হাজার ১৮৫ রান আর ৫৪০ উইকেট তাঁর। জ্যাক ক্যালিস ছাড়া আর কোনো অলরাউন্ডারের ১১ হাজার আর ৫০০ উইকেট পাওয়ার কীর্তি নেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেও বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে আরও দুই বছর খেলে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ক্রিকইনফো, এএফপি। 
আফ্রিদির ক্যারিয়ার 
ব্যাটিং
ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড়
টেস্ট ২৭ ১৭১৬ ১৫৬ ৩৬.৫১
ওয়ানডে ৩৯৮ ৮০৬৪ ১২৪ ২৩.৫৭
টি-টোয়েন্টি ৯৮ ১৪০৫ ৫৪* ১৮.০১
বোলিং
ওভার উইকেট গড় সেরা
টেস্ট ৫৩২.২ ৪৮ ৩৫.৬০ ৫/৪৩
ওয়ানডে ২৯৪৫.০ ৩৯৫ ৩৪.৫১ ৭/১২ 
টি-টোয়েন্টি ৩৫৭.২ ৯৭ ২৪.৩৫ ৪/১১

Source : Prothomalo
Earn Money Online

https://dailynewstimesbd.com/

Post a Comment

আপনার মেসেজের জন্য ধন্যবাদ, আপনাদের সকল মেসেজ গুলি আমি দেখি, ব্যাস্ততার জন্য অনেক সময় উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না, আশা করি সময় করে সবার উত্তর দিবো,, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য

Previous Post Next Post

Popular Posts